IQNA

প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাবু গৃহহীনদের বাঁচাতে খুলে দেয়া হলো ব্রিটেনের মসজিদগুলোর দুয়ার

15:48 - March 04, 2018
সংবাদ: 2605179
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপ জুড়ে চলা প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাবু গৃহহীন লোকদেরকে বাঁচাতে খুলে দেয়া হলো যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের বেশকিছু মসজিদের দুয়ার। ওইসব অসহায় লোকদের নিরাপদ আশ্রয়ের পাশাপাশি সংস্থান করা হলো তাদের খাবারেরও।



বার্তা সংস্থা ইকনা: শুক্রবার ব্রিটেনের আবহাওয়া অফিস দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ ওয়ালেসে তুষারের জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করে। ঠাণ্ডা ঝড় ইমা নিয়ে আসে তুষার ঝড় ও প্রচণ্ড বাতাস।

‘তাপমাত্রা বেশ তীব্র। তাই আমরা ভাবলাম, অসহায়দের জন্য কিছু একটা করার’, আল জাজিরাকে বলছিলেন ম্যানচেস্টারের উত্তরাংশে অবস্থিত মাক্কি মসজিদের ট্রাস্টি রবনওয়াজ আকবর।

গত কয়েকদিন ধরে প্রার্থনার জায়গার বাইরের অংশে স্বেচ্ছাসেবিরা ম্যানচেস্টারের গৃহহীনদের জন্য আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে।

আশ্রয়ের খোঁজ করা এসব মানুষের জন্য গোসলাদির ব্যবস্থা করছে মসজিদ।

মসজিদটি দক্ষিণ এশিয়ান অধ্যুষিত এলাকায় অবস্থিত হওয়ায়, ভাত ও মুরগির গোশতের মতো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানি ঘরানার খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।

আকবর বলছিলেন, ম্যানচেস্টারে গৃহহীন লোকজনের সংখ্যা বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই মসজিদে অবস্থান করা ৪ জনের একজন ছিলেন জেমি।

তিনি বলেন, ‘আমি একজন মাদকাসক্ত। আমি জীবনে কখনো মসজিদে যাইনি। আমি দু’ধরনের চিন্তা করছিলাম। একবার ভাবছিলাম আমি কিছু হিরোইন নেব যাতে রাতটা কাটিয়ে দিতে পারি। আমি যখন এ ধরনের ভাবছিলাম তখন একজন আমার পাশে এসে আমাকে বললেন, আপনি গৃহহীন, আপনি মসজিদে রাত কাটাতে চান?’

‘তারা আমাকে অনেক আপ্যায়ন করলেন। আমাকে কিছু খেতে ও পান করতে দিলেন। সেখানে আরেকটা বিশেষ জিনিস পেলাম, সেটা হলো মনস্ত্বাত্ত্বিক পরামর্শ, যেটা আমাদের কখনো দেয়া হয় না’, বলছিলেন জিমি।

জিমির বক্তব্য, ‘মিডিয়ায় মসজিদকে প্রায়ই খারাপভাবে উপস্থাপন করা হয়।’

আয়ারল্যান্ডের ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের অধীনস্থ লিডস গ্র্যান্ড মসজিদ, ওল্ডহাম মসজিদ, ফিনসবারি পার্ক মসজিদ, ক্যান্টাবারি মসজিদ ও ডাবলিনের ক্লোনসকিগ মসজিদও গৃহহীনদের আশ্রয়ের জন্য তাদের দুয়ার খুলে দিয়েছে।

আয়ারল্যান্ড ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান সুম্মায়াহ কেন্না ডাবলিনের ৯৮এফএম রেডিওকে বলেন, ‘রাতে তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের একটি নিরাপত্তা দল নিয়োজিত থাকে। তারা ভবনের তাপমাত্রা বিশেষ করে শেষ রাতে তাপমাত্রা যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে তার দিকে খেয়াল রাখে।’

জানুয়ারির শেষদিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখানে সেখানে রাত্রি যাপন করা লোক বর্তমানে ৮ হাজার। যদি এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ না নেয়া হয়, তাহলে ২০২৬ সালে এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ১৫ হাজারে। আল জাজিরা।

captcha